শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন
বিডিনিউজ : পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১ মার্চ হঠাৎ করেই জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করলে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে গোটা দেশ। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রসমাবেশে প্রথম বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সেদিন পাতাকা উত্তোলন করেন ছাত্রনেতা আ স ম আবদুর রব। সঙ্গে ছিলেন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা তোফায়েল আহমদ, আবদুল কুদ্দুস মাখন এবং নূরে আলম সিদ্দিকী। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার এবং শেষ পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প ঘোষণা করা হয় সেই সভা থেকে।
ছাত্রলীগ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ এবং ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখনও বক্তৃতা করেন। সভা শেষে এক বিরাট শোভাযাত্রা স্বাধীনতার শ্লোগান দিতে দিতে বায়তুল মোকাররমে যায়।
দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সচিবালয়ে পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকা পতাকা ওড়ানো হয়।
ওই রাতে বেতারের মাধ্যমে ঢাকা শহরে কারফিউ জারির ঘোষণা আসে। সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ছাত্রাবাস ও শ্রমিক এলাকা থেকে ছাত্র-জনতা ও শ্রমিকরা শ্লোগান দিতে দিতে কারফিউ ভঙ্গ করে মিছিল বের করেন।
তাদের শ্লোগান ছিল- ‘সান্ধ্য আইন মানি না’, ‘জয় বাংলা’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’।
ডিআইটি এভিনিউর মোড়, মর্নিং-নিউজ পত্রিকা অফিসের সামনে রাত সাড়ে ৯টায় সামরিক বাহিনী জনতার ওপর গুলি চালায়। বিপুল জনতা কারফিউ ভঙ্গ করে গভর্নর হাউজের দিকে এগিয়ে গেলে সেখানেও গুলি চালানো হয়। এছাড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ ভঙ্গকারীদের ওপর বেপরোয়া গুলি চলে।
২ মার্চ ইত্তেফাক পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল- ‘জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত।’
খবরে বলা হয়, জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত হওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ‘আকস্মিক ভাবে আহূত’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সংখ্যালগিষ্ঠ দলের সেন্টিমেন্টের জন্য অধিবেশন স্থগিত করা হয়েছে এবং এটা মেনে নেওয়া হবে না।
আর অধিবেশন স্থগিতের ঘোষণায় যে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, ইত্তেফাকের সেই খবরের শিরোনাম ছিল- ‘প্রতিবাদে রাজধানীতে প্রচণ্ড বিক্ষোভ।’
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও ১৯৭১ সালে প্রকাশিত সংবাদপত্র।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply